শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন
নড়াইল প্রতিনিধি::
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চাচই গ্রামে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। এ সময় পুলিশের হামলায় একজন প্রতিবন্ধীসহ ৮/১০ জন আহত হয়েছে। আহত প্রতিবন্ধিকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে ওই এলাকার মানুষজনদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চাচই গ্রামের পশ্চিম পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সায়েম আলীর ছেলে সৈয়দ রিজাউলের বিরুদ্ধে পার্শ্ববর্তী মরিচপাশা গ্রামের মৃত আদিল উদ্দিন সরদারের ছেলে রানা সরদার ওরফে পাখি বাদী হয়ে বিগত ২০১৮ সালে আদালতে একটি চেক ডিজ অনার মামলা দায়ের করেন এবং গত ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর উক্ত মামলায় আদালত রিজাউলকে ৬ মাসের জেল ও ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। রায়ের পর থেকেই রিজাউল পলাতক ছিলেন।
এদিকে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লোহাগড়া থানার এএসআই কামরুজ্জামানসহ সঙ্গীয় কনষ্টেবল সাজাপ্রাপ্ত রিজাউলকে গ্রেপ্তার করার জন্য শনিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে চাচই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার রিজাউলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে মোটরসাইকেল যোগে থানার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ওই বাড়ির লোকজন পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ‘চোর’ ‘চোর’ বলে চিৎকার করে ধাওয়া দিয়ে ব্যর্থ হয়। এএসআই কামরুজ্জামান আটক আসামীকে নিয়ে থানায় আসেন এবং থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) সৃষ্ট ঘটনা সম্পর্কে অবগত করেন। এরপর রাত ৮টার দিকে লোহাগড়া থানায় কর্মরত ৮/১০ জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ সঙ্গীয় কনষ্টেবল ঘটনাস্থল চাচই গ্রামের ডাক্তার বাড়ি মোড়ে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় মানুষজনদের ওপর লাঠি ও হকিষ্টিক দিয়ে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। এ সময় পুলিশ শারীরিক প্রতিবন্ধি মাখম শেখ (৫৪) ওপর চায়ের দোকানের কেটলির গরম পানি ঢেলে দেয়। এতে মাখমের শরীরের নিম্নাংশ ঝলসে যায়। রাতেই তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জে ওই গ্রামের ফটিক খান (৭৫), আইয়ুব শিকদার (৬৬), তুহিন শিকদার (৩০), শাহজাহান (৪৫), লিটু জমাদ্দার (৪৫), ফারুক ফকির (২০), মাকসুদ মোল্যা (৪০), হাসান সরদার (৫১) কমবেশী আহত হয়। শুধু তাই নয়, পুলিশ ক্ষুদ্র দোকানী আশরাফ, ইকবাল, মোস্তাইন, আলামিন, মাহাবুল ফকির, সিরাজ খান, মাকসুদ মোল্যা, হাসিব কাজী, আইয়ুব শিকদারের দোকানঘর ভাঙচুর করে ক্ষতি সাধন করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এএসআই কামরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সৃষ্ট ঘটনার ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান রোববার দুপুরে আহত প্রতিবন্ধি মাখমকে দেখতে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান এবং তার চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। এ ব্যপারে তিনি বলেন, পুলিশ বাড়াবাড়ি করেছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সৃষ্ট ঘটনা মীমাংসার জন্য চেষ্টা চলছে।